মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
কাল ঢাকায় আসছেন ডোনাল্ড লু, যা বলছে প্রধান দুই দল ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সহকারী কমিশনার বদলি বিএসএফের পোশাকে সীমান্তে মাদকের কারবার করতেন রেন্টু কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে এমভি আবদুল্লাহ ভারতে চতুর্থ দফা লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ ও কাশ্মিরে কেমন ভোট হলো বিভাজন থেকে বেরিয়ে এসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা উচিত : মির্জা ফখরুল মৃত্যুদণ্ডাদেশ চূড়ান্ত হওয়ার আগে কনডেম সেলে রাখা বেআইনি : হাইকোর্ট আমার পুরো ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল : মনোজ মানবদেহে প্রথম ব্রেইনচিপ ইমপ্লান্টে ধাক্কা খেলো নিউরালিংক ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রে ৫০ অধ্যাপক গ্রেপ্তার
সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক জোটে যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ

সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক জোটে যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ

স্বদেশ ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক জোট রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপে (আরসিইপি) যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে বলা হয়েছে। পৃথিবীর জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ এবং ৩০ শতাংশ জিডিপি ধারণক্ষমতার আরসিইপিকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ বাণিজ্যিক ফোরাম হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। ১৫টি রাষ্ট্রের বাণিজ্যনির্ভর এ আঞ্চলিক ফোরাম কার্যকর হতে আরও তিন বছর লাগবে।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর আত্মপ্রকাশ করা জোটটিতে আসিয়ানভুক্ত ১০টি দেশ ছাড়াও চীন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও নিউজিল্যান্ড যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশ সদস্য না হলে দেশের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারের একটি সংস্থার প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি প্রতিবেদনটি পররাষ্ট্র, বাণিজ্য এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০ বছরের মধ্যে আরসিইপিভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে মুক্তবাণিজ্য অর্থনীতি চালু হবে। বাংলাদেশকে এ ফোরামে যোগ দিতে কূটনৈতিকভাবে অনুরোধ করা হয়নি। বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য মূলত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নমুখী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোয় বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি মোট বাণিজ্যের ১০ শতাংশ। চীনের বাজারে ৯৭ শতাংশ রপ্তানি পণ্যের ওপর শুক্তমুক্ত সুবিধা পাওয়া গেছে। তবে ভবিষ্যত সম্ভাবনা ও বাণিজ্যিক পরিসর বৃদ্ধি বিবেচনায় আরসিইপিতে বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আরসিইপিভুক্ত অন্য দেশগুলোকে যেখানে ৬৫ শতাংশ পণ্যের ওপর শুল্কবিহীন সুবিধা দিতে হবে, সেখানে কম্বোডিয়া, লাওস, ভিয়েতনাম, মিয়ানমারের মতো স্বল্পোন্নত দেশ ৩০ শতাংশ পণ্যে শুল্কবিহীন সুবিধা দেবে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ তার সমপর্যায়ের অর্থনীতি মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের সঙ্গে বিরূপ বাণিজ্যিক প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হবে।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, আরসিইপিতে যোগদানের বিষয়ে বাংলাদেশ কৌশলগত অবস্থান নিতে চায়। কারণ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা আসিয়ানভুক্তরাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আমদানিনির্ভর। ভারত এই ফোরামে যোগদান থেকে বিরত রয়েছে। তারা মনে করছে, জোটভুক্ত হলে চীনের স্বল্পমূল্যের জিনিস ভারতে সহজে প্রবেশ করবে। এতে ভারতের ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বিলুপ্তির হুমকিতে পড়বে।

প্রতিবেদনে ১৪টি পর্যালোচনা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, আগামী ১০ বছরে ফোরামভুক্ত দেশগুলো থেকে চীন ২২ ট্রিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য আমদানির ঘোষণা দিয়েছে। এর পাশাপাশি আরসিইপির আওতায় শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধা আসিয়ানভুক্ত রাষ্ট্রগুলোকে এ জোটে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশ্লে­ষকরা মত দিয়েছেন- বিমসটেকের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ আসিয়ান ও আরসিইপির সদস্য হওয়ার যোগসূত্র পেতে পারে। বিশ্লেষকরা আরসিইপিকে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বৈশ্বিক মহামারীপরবর্তী অতিপ্রয়োজনীয় একটি অর্থনৈতিক প্ল্যাটফরম হিসেবে অভিহিত করেছেন।

যদিও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাস্তবতা কিছুটা ভিন্ন। কারণ বাংলাদেশের শিল্প স্থাপনার মোট কর্মসংস্থানের ৮০ শতাংশ সিএমএসএমইর (কটেজ, মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজ) অন্তর্র্ভুক্ত এবং দেশের মোট কর্মশক্তির ৩৫ শতাংশ এ সেক্টরের সঙ্গে জড়িত। তাই উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর উৎপাদিত পণ্যের অবাধ প্রবেশাধিকার পেলে বাংলাদেশের উদীয়মান শিল্পের সম্ভাবনা ব্যাহত হতে পারে।

২০২৪ সালে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবে। এতে ইউরোপীয় ইউনিয়নে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত বাজারে প্রবেশের সুবিধা হারানোর আগে তিন বছরের অন্তর্বর্তীকাল অর্থাৎ ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে সময় দেওয়া হবে। তবে স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য বিস্তৃত করার জন্য আরসিইপিতে যোগদানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

পর্যালোচনায় বলা হয়, চীন প্রভাবিত আরসিইপিতে যোগ দিলে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে যেন নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে, সে বিষয়ে আগাম কূটনৈতিক বোঝাপড়া সমীচীন হবে। আরসিইপিতে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে চীন ও জাপান বাংলাদেশের জন্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় মুক্তবাণিজ্য চুক্তি করার জন্যও সুপারিশ করা হয়েছে। এসব বিষয়ে উদ্যোগ নিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি সুপারিশ করা হয়। আর ভারত, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং এশিয়ান হাইওয়ের ফলপ্রসূ বাস্তবায়নের জন্য সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877